২০২৪ সালের ৫৭ তম বিশ্ব ইজতেমার বাকি আর মাত্র ১ দিন। বিশ্ব ইজতেমার প্রায় সকল কার্যক্রম শেষ এবং চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দলে দলে মুসল্লীবৃন্দ আসছেন টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায়। অনেকেই আসার পরে বিশ্ব ইজতেমার আশেপাশে অবস্থান করছেন এবং কেউ কেউ ইজতেমার প্যান্ডেলের ভিতরে অবস্থান করতেছেন। তবে মুসল্লিরা আসা শুরু করছেন।
ইতিমধ্যে ২০২৪ সালের বিশ্ব ইজতেমার যে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা যেমন প্যান্ডেল তৈরি সহ অন্যান্য কার্যাবলী সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এখন শুধু মুসল্লিরা দলে দলে আসবে এবং যার যার নিজ জায়গা মতো অবস্থান করবে।
ইজতেমার মুসল্লিবন্দরা তারা তাদের ক্ষিত্তা অনুযায়ী অবস্থান করছেন। এবং তারা দলবেঁধে তাদের ঠিক তাই পৌঁছাচ্ছেন।
মুসল্লীবৃন্দদের জন্য পাঁচটি ভাসমান সেতু তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের অজুখানা এবং আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিস আনা হয়েছে। যে সকল নিরাপত্তা দরকার হয়েছে এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তাকর্মী এবং সিসি ফুটেজ লাগানো হয়েছে।
পুরো ইজতেমার ময়দান টি সিসিটিভি প্রোটেস্ট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এবং চারপাশে রয়েছে নিরাপত্তা কর্মী। এছাড়া রয়েছে দূরদূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। এছাড়া ময়দানের আশেপাশে রয়েছে প্রয়োজনীয় দোকানপাট। যেখান থেকে আপনি সহজেই কোন কিছু ক্রয় করতে পারবেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লিরা তারা তাদের খেত্তা অনুযায়ী অবস্থান করছেন। তারা নিজেই নিজের প্লাস্টিক অথবা কাপড় দিয়ে তাদের ঘর তৈরি করতেছেন। তাদের খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করতেছেন। অর্থাৎ বিশ্ব ইজতেমা সফল করার জন্য সকল কার্যক্রম নিজেই করতেছেন।
মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ, ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম অংশ শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি)। এরইমধ্যে ইজতেমা মাঠে সারিরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। ইজতেমার প্রথম অংশ শেষ হবে রবিবারের শেষ মুনাজাতের মাধ্যমে।
বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা এবং তুরাগ নদে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অস্থায়ী সেতু তৈরি করেছেন। বিশাল মাঠে খিত্তা-ভিত্তিক মাইক এবং বাতি বাঁধার জন্য বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ প্রায় সম্পন্ন। পাকা দালানে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার অস্থায়ী টয়লেট ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং ওজু ও গোসলের হাউজগুলো পানিতে ভরে উঠেছে।
এবারের ছয় দিনের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম অংশে মাওলানা জোবায়েরপন্থি মুসল্লিদের অংশগ্রহণ করবেন। চার দিন বিরতির পর ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় অংশের ইজতেমা শুরু হবে। এ অংশে অংশগ্রহণ করবেন সাদপন্থি মুসল্লিদের।
স্থানীয় প্রশাসন দুই গ্রুপের মুরুব্বিদের সর্বশেষ সমন্বয় সভা করেছে। সভায় দুই গ্রুপই স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছে যে, কোনো বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস প্রদান করেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ছয়টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তুরাগ নদীর তীরে বিদেশ থেকে আগতদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। মূল বয়ানের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
১৯৪৬ সালে প্রথমবারের মতো কাকরাইল মসজিদে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে, ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এবং ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর পাগাড় গ্রামে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। অবশেষে, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টঙ্গীর তুরাগ তীরবর্তী মাঠটি ইজতেমার জন্য বরাদ্দ করেন। তারপর থেকেই অদ্যাবধি ১৬০ একর বিশাল মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ব ইজতেমা।