মিল্টন সমাদ্দার নিউজ | মিল্টন সমাদ্দারের যত অপকর্ম

মিল্টন সমাদ্দার নিউজ | মিল্টন সমাদ্দারের যত অপকর্ম: মিল্টন সমাদ্দার, একজন ব্যক্তি যিনি ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অসহায় মানুষদের সাহায্য করার দাবি করেন। ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে তিনি অর্থ সংগ্রহ করেন এবং দাতাদের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে তিনি জমি দখল করছেন, আশ্রমের কর্মীরা সহিংস আচরণ করছে, এবং এমনকি মৃতদেহ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরি করারও অভিযোগ রয়েছে।

মিল্টন সমাদ্দার: অভিযোগ ও দাবির তালিকা

বিষয়মিল্টন সমাদ্দারের দাবিস্থানীয়দের অভিযোগপ্রমাণ
আশ্রমের আবাসিক সংখ্যাসাভারে 200+, দক্ষিণ পাইকপাড়ায় 20সাভারে সর্বোচ্চ 50-60, দক্ষিণ পাইকপাড়ায় অজানা
জমি দখলঅস্বীকারশামসুদ্দিন চৌধুরীর অভিযোগ, জমি দখলের জন্য পরিবারকে নির্যাতন
কর্মীদের আচরণনিয়মিতলাঠিয়াল বাহিনীর মতো আচরণ, ভয়ভীতি দেখানো
বাবার মারধরঅস্বীকার2005 সালে বরিশালে ঘটনা
মৃতদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরিঅস্বীকারমসজিদ কর্মীদের সন্দেহ, ক্যামেরা বসানোর পর মরদেহ পাঠানো বন্ধ
কবুতর হত্যার জন্য নির্যাতনঅস্বীকারঘটনার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন
চার্চ দখলঅস্বীকারধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে কমিটি গঠন, যাজকদের লাঞ্ছিত করাধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠি
আর্থিক অনিয়মঅস্বীকারট্রাস্টি বোর্ড গঠন না করা, কোটি কোটি টাকার হিসাব অডিট না করাসমাজসেবা অধিদফতরের তদন্ত

মিল্টন সমাদ্দার ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ার বাসিন্দাদের স্পর্শকাতর একটি অভিযোগ রয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, আশ্রমে দুই থেকে তিনদিন পরপরই মানুষ মারা যেতো। পরে গোসলের জন্য তাদের পার্শ্ববর্তী বায়তুস সালাহ মসজিদে নিয়ে যাওয়া হতো। মসজিতে গোসলের কাজে নিয়োজিতরা মরদেহের শরীরের সন্দেহজনক কাটাছেঁড়া দেখতে পান। এতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ শরীর থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরির সন্দেহ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, প্রত্যেকটি মরদেহেই কাটাছেঁড়া থাকে। এ কারণে গোসলের কাজে নিয়োজিত একজন গোসল করাতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলে মরদেহ সেখানে পাঠানো বন্ধ করে দেয়া হয়।

স্থানীয় আরেকজন জানান, মিল্টন কিছু ছেলেপেলেকে পুষতো। কিছুদিক আগে তার আশ্রমে কবুতর যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুইজনকে আটকে নির্যাতন করে সে।

দখল ও প্রতারণায় মিল্টন সমাদ্দারের আরও পুরোনো ইতিহাস রয়েছে। নিজ এলাকা বরিশালের উজিরপুরে ‘চন্দ্রকোনা খ্রিষ্টান মিশনারি চার্চ’ নামে একটি চার্চ রয়েছে। এটি দখলের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে সে। পরে বরিশাল জেলা প্রশাসককে একটি চিঠিও দেন তিনি। ওই কমিটিতে মিল্টন সমাদ্দারকে সভাপতি করা হয়। কমিটির বাকিরা তার স্ত্রী ও ভাই।

পরে বিষয়টি চার্চের যাজকদের নজরে আসলে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেন তারা। মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি বলে তাদের জানানো হয়।

যাজকরা জানান, চার্চটিকে দখল করতে তারা ব্যপক চেষ্টা চালায়। শারীরিক ও মানসিকভাবে তাদেরকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও জানান তারা।

মিল্টন সমাদ্দার নিউজ | মিল্টন সমাদ্দারের যত অপকর্ম

এসব স্পর্শকাতর নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিটি অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী। মিল্টন সমাদ্দার বলেন, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করার যে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো কোন হাসপাতালে বিক্রি করা হয়েছে এর প্রমাণ দেখাতে হবে।

তার স্ত্রী কিশোর বালা জানান, তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউট হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত। এমন পেশায় থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারেন না তিনি।

মিল্টন সমাদ্দারের প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিয়েছিল সমাজসেবা অধিদফতর। কিন্তু সেখানে সরকারি নিয়মের কিছুই মানা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো ট্রাস্টি বোর্ড করা হয়নি। দান হিসেবে কোটি কোটি টাকা পেলেও কখনোই আয়-ব্যয়ের হিসাবের কোনো অডিট করা হয়নি। এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে গত ২৫ মার্চ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সমাজসেবা অধিদফতর।

Check Also

আজকের-সোনার-দাম

আজকের সোনার দাম ২০২৪ 

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেট সোনার (যার এক ভরি ১১ দশমিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *