উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে, তৎকালীন বঙ্গের টাঙ্গাইল জেলায় তাঁত শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটে। টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিরা ঐতিহ্যবাহী মসলিন তাঁতের কারিগরদের বংশধর। তাদের আদি নিবাস ছিল ঢাকা জেলার ধামরাই ও চৌহাট্টা এলাকায়।
ধামরাই ও চৌহাট্টা থেকে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার, সন্তোষ ও ঘ্রিন্দা এলাকায় তাঁতিদের আসার পেছনে জমিদারদের ভূমিকা ছিল। জমিদাররা তাদের এলাকায় তাঁত শিল্পের প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন এবং তাই ধামরাই ও চৌহাট্টার দক্ষ তাঁতিদের টাঙ্গাইলে আমন্ত্রণ জানান।
টাঙ্গাইলে এসে তাঁতিরা প্রথমে নকশাবিহীন কাপড় তৈরি করতেন। কালক্রমে, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা বিভিন্ন নকশার শাড়ি বুনতে শুরু করে। আজকের দিনে, টাঙ্গাইল শাড়ি তার সূক্ষ্ম কারুকাজ, অসাধারণ নকশা ও উজ্জ্বল রঙের জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে।
টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শাড়ির মধ্যে অন্যতম। এই শাড়ির উৎপত্তিস্থল টাঙ্গাইল জেলা, যা ঢাকার উত্তরে অবস্থিত।
টাঙ্গাইল শাড়ির উপাদান
টাঙ্গাইল শাড়ি মূলত তুলা ও রেশম দিয়ে তৈরি করা হয়। তুলা সুতির শাড়িগুলি হালকা ও আরামদায়ক, যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। রেশমের শাড়িগুলি আরও উষ্ণ এবং উৎসবের জন্য উপযুক্ত।
শৈলী: টাঙ্গাইল শাড়ি বিভিন্ন রঙ, নকশা এবং শৈলীতে পাওয়া যায়। শাড়ির পাড়ে বিভিন্ন ধরনের নকশা থাকে, যেমন – সূতিপাড়, কটকি, স্বর্ণচুড়ি, ইককাত, আনারকলি, দেবদাস, কুমকুম, সানন্দা, নীলাম্বরী, ময়ুরকন্ঠী ইত্যাদি।
টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবহার
টাঙ্গাইল শাড়ি দৈনন্দিন এবং উৎসব উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। সুতির শাড়িগুলি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত, যেখানে রেশমের শাড়িগুলি বিবাহ, পূজা, পারিবারিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির মতো বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত।
টাঙ্গাইল শাড়ির বৈশিষ্ট্য:
- হালকা ও আরামদায়ক
- বিভিন্ন রঙ, নকশা এবং শৈলীতে পাওয়া যায়
- দৈনন্দিন এবং উৎসব উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়
- বাংলার ঐতিহ্যবাহী পোশাক
- দেশ-বিদেশে সমান জনপ্রিয়