সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অধিভুক্ত কলেজগুলোর স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরীক্ষাটি বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
এই ঘোষণার পর দেশব্যাপী অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হলো, এতদিন ধরে সাধারণ আবেদনের মাধ্যমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতো। কিন্তু এখন ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও পরীক্ষার তারিখ এবং পরীক্ষার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি, যা তাদের উদ্বেগের মূল কারণ।
এই পরিস্থিতিতে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি আরও জানান যে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ভর্তি সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এই বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার পদ্ধতি, কোন কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং কোন বিষয়ে কত নম্বর থাকবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ থাকবে।
আরও পড়ুন- ২০২৫ সালের স্কুল,কলেজের ছুটির তালিকা
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান যে শিক্ষার্থীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই এবার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহেই এই বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো, যেখানে একজন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীও মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হতে পারে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও এবার একই সুযোগ থাকবে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের জন্য বিভাগ পরিবর্তন করে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচী সম্পর্কে উপ-উপাচার্য জানান যে এখনও চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি, তবে তাদের পরিকল্পনা হলো গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার আগেই এই পরীক্ষা নেওয়া এবং ভর্তির কার্যক্রম শুরু করা। তাদের ধারণা, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে পারে, যা সম্ভবত গুচ্ছ পরীক্ষার আগেই অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষা কোথায় অনুষ্ঠিত হবে, এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম জানান যে দেশের ৬৪টি জেলা শহরেই এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য তারা তাদের নিজ নিজ জেলা শহরেই পরীক্ষা দিতে পারবে।
অতীতের ভর্তি পদ্ধতির বিষয়ে তিনি বলেন, এর আগে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। কিন্তু ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো জিপিএর (গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) ভিত্তিতে অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া শুরু করে। অর্থাৎ, এই সময় থেকে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। এর আগে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করা হতো।
![জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা তারিখ প্রকাশ](https://ntrcanotice.com/wp-content/uploads/2024/12/জাতীয়-বিশ্ববিদ্যালয়-ভর্তি-পরীক্ষা-তারিখ-প্রকাশ.png)